Headlines
Loading...
এশিয়া মহাদেশের অজানা ইতিহাস

এশিয়া মহাদেশের অজানা ইতিহাস

আমরা সকলেই জানি পৃথিবীর সৃষ্টির হওয়ার সময় পৃথিবীর জ্বলন্ত আগুনের পিণ্ড ছিল। সেই অবস্থা থেকে কোটি কোটি বছর ধরে তাপ বিকিরণ এর মাধ্যমে পৃথিবীর ঠান্ডা হয়েছে। তবে সেই সময়ে পৃথিবীতে কোন দেশ ছিল না। তখন সম্পূর্ণ পৃথিবীতে একটি মাত্র ভূখণ্ড ছিল যাকে বলা হয় প্যানজিয়া। এবার প্রশ্ন হল পৃথিবীতে যদি সৃষ্টির সময় একটিমাত্র ভূখণ্ড থেকে থাকে তাহলে আজ আমরা যে মহাদেশ মহাসমুদ্র দেখতে পাই সেগুলো কোথা থেকে এলো? ভারত বর্ষ কিভাবে সৃষ্টি হল? আর কেন ভারত এশিয়া মহাদেশের সাথে যুক্ত? পৃথিবীর সৃষ্টির সময় এটি ছিল একটি গোলাপ লাভা যা কোটি কোটি বছর ধরে শীতল হয়। এই সময় পৃথিবীর উপরিভাগে থাকে লাভা ঠান্ডা হয়ে শক্ত হয়ে যায়। তখন পৃথিবীতে একটি বিশাল আকার ভূখণ্ডের সৃষ্টি হয় যাকে বলা হয় প্যানজিয়া। সেই সময় আজকের মত সাতটি মহা সমুদ্রের ছিলনা। সেসময় পৃথিবীতে একটি মহাদেশ ছিল। যার নাম বিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়েগনার বলেন কয়েক কোটি বছর ধরে ধীরে ধীরে দু'ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। উত্তরভাগ টির নাম ছিল লরেশিয়া এবং দক্ষিণভাগ নাম ছিল গন্ডোয়ানাল্যান্ড।

এশিয়া মহাদেশের অজানা ইতিহাস

বিজ্ঞানী আলফ্রেড বলেন, প্যানজিয়া মহা খন্ডটির উত্তরভাগ থেকে বর্তমানের উত্তর আমেরিকা ইউরোপ এবং এশিয়া মহাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। আর দক্ষিণভাগ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, আন্টার্টিকা এবং ভারতবর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সময়ের সাথে সাথে এদের মধ্যে একটি দূরত্ব বাড়তে থাকে আর এদের মধ্যে খানে একটি অগভীর সমুদ্র সৃষ্টি হয় যাকে বলা হয় টেথিস সাগর। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় 24 কোটি বছর আগে সেই বিশাল ভূখণ্ডটি বিভিন্ন দিকে সরে যেতে শুরু করে। উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে আটলান্টিক মহাসাগর গঠন করে। এরপর অস্ট্রেলিয়া পূর্ব দিকে সরে গিয়ে ভারত মহাসাগর গঠন করে। কিন্তু এই সময়ে আন্টার্টিকা দক্ষিণ মেরু অঞ্চল থেকে যায় প্রশান্ত মহাসাগর নামে থেকে যায়। আর এই প্রক্রিয়া প্রায় কয়েকটি বছর ধরে চলেছিল। এভাবেই ওই মহা খন্ড থেকে বর্তমানে মানচিত্রে থাকা বিপুলসংখ্যক দেশের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই খণ্ডগুলোর বিভক্ত হওয়ার ফলে মাঝখানে ফাঁকা জায়গা গুলোতে তৈরি হয়েছে মহাসাগর। বর্তমানে ভৌগলিক দিক দিয়ে ভারত এশিয়ার একটি অংশ। তবে কয়েক কোটি বছর আগে ভারতের থাকে বর্তমানে মানচিত্রে থাকা বিপুলসংখ্যক দেশের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই খণ্ডগুলোর বিভক্ত হওয়ার ফলে মাঝখানে ফাঁকা অনুযায়ী জায়গাগুলোতে তৈরি হয়েছে মহাসাগর।

এশিয়ার বর্তমান দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে। কয়েক হাজার বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকার পর একসময় ভারতের একটি লাদাখের সাথে ধাক্কা মারে এবং ভারতের অংশটি লাদাখের সাথে জুড়ে যায়। এভাবে কোন গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারতে পরিণত হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা বলেন, যখন ভূখণ্ডের দুটি অংশ একে অপরের সাথে ধাক্কা খায় তখন হাড়ি-পাতিল নিচের দিকে চলে যায় এবং হালকা পাহাড়ি পথের উপরে উঠে যায়। এখানে ভারতের পাট ও লাদাখের ইউরেশীয় পাতের মধ্যে থাকার ফলে সেই অংশের মাটিতে ভাঁজ পড়ে এবং সৃষ্টি হয় আজকের হিমালয় পর্বতমালা যা বর্তমানে বিশ্বের সবথেকে উঁচু পর্বতমালা। বিজ্ঞানীরা বলছেন ভারতীয় এখনো প্রতিবছর 5.4 সেন্টিমিটার করে উত্তর দিকে এগিয়ে আসছে তাই হিমালয়ের উচ্চতা এখনো ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আর এই কারণে ভারতের এই অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভব করা যায়। এখন আপনি যদি মনে করেন পৃথিবীতে বিপুল বদল মাত্র কয়েকদিন বা কয়েক বছরে ঘটেছে তাহলে আপনি সম্পূর্ণ ভুল। পৃথিবীর হতে সময় লেগেছে প্রায় কয়েক শ' কোটি বছর। সৃষ্টির সময় থেকে এখনো পর্যন্ত অনবরত পৃথিবীতে বদল হচ্ছে। তবে তা এতটাই ধীরগতিতে হচ্ছে যে আমার বা আপনার আপাতদৃষ্টিতে সেটা বোঝা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে ঘটে চলা প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে সবসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই সম্পর্কে আমরা জানতে পারি বিজ্ঞানী আলফ্রেড এর প্রমাণ হিসেবে বলে, যদি পৃথিবীর সমস্ত ভূখণ্ডকে আবার জুড়ে দেওয়া যায় তবে একবার প্রিয়া নামের ভূখণ্ড গঠিত হবে। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করেন যে সকল টুকরোগুলো একে অপরের সঙ্গে মিলে যায়।