যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
কাশ্মির, একটি অঞ্চল যা দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু, ২০২৫ সালের মে মাসে নতুন করে উত্তেজনার মুখোমুখি হয়। ২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি সন্ত্রাসী হামলা ঘটে, যেখানে ২৮ জন নিরীহ নাগরিক, প্রধানত পর্যটক, নিহত হন। ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠন—যা লস্কর-ই-তাইবার সঙ্গে যুক্ত বলে ভারত দাবি করে—এই হামলার দায় নেয়। ভারত এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে, অভিযোগ করে যে পাকিস্তান সীমাপার হামলা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করে। এর পরিপরিপ্রেক্ষিতে, ৬ মে, ২০২৫-এ ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়, যেখানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান এই আক্রমণকে অস্বীকার করে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য পাল্টা আক্রমণ শুরু করে, যা একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধে পরিণত হয়।
কেন যুদ্ধ হলো: কারণ ও কাদের সঙ্গে?
এই যুদ্ধের মূল কারণ ছিল কাশ্মির নিয়ন্ত্রণের বিরোধ। ভারতের দৃষ্টিকোণে, পাকিস্তান সীমান্ত পার হয়ে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ ও সমর্থন দেয়, যা ভারতের জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বিশেষ করে পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যার ফলে এই সংঘাত গভীরতর হয়। অন্যদিকে, পাকিস্তানের দাবি ছিল যে ভারত নিজেই কাশ্মিরে দমনমূলক নীতি চালিয়ে জনগণের অধিকার লঙ্ঘন করছে, এবং পাকিস্তান শুধুমাত্র স্ব-প্রতিরক্ষা ও কাশ্মিরীদের ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করছে।
যুদ্ধটি প্রধানত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তবরাবর লড়াইয়ের রূপ নেয়, তবে এর প্রভাব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েও পড়ে। চীন, পাকিস্তানের প্রধান সঙ্গী হিসেবে, ভারতের বিরুদ্ধে কৌশলগত সমর্থন দেয়, যদিও সরাসরি সামরিক জড়িততা এড়ায়। আমেরিকা ও রাশিয়া শান্তির আহ্বান জানালেও, তাদের মধ্যস্থতা বিফল হয়।
যুদ্ধের ধরন: কীভাবে এগিয়েছে?
যুদ্ধ ৬ মে শুরু হয়ে ১০ মে, ২০২৫ পর্যন্ত চলছে। ভারত প্রথমে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলি এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পাকিস্তান বিমান বাহিনী দ্রুত উত্তর দিয়ে ভারতীয় রাফাল ও মিগ-২৯ বিমান ভূপাতিত করে। সীমান্তে ট্যাঙ্ক ও সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাড়ে, বিশেষ করে গিলগিত-বালতিস্তান ও জম্মু অঞ্চলে। পাকিস্তানের JF-17 থান্ডার এবং J-10C বিমান ভারতের উন্নত প্রযুক্তির রাফালের সঙ্গে সাক্ষাতে আসে, যা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য।
কারা কতগুলো মারা গেল?
যুদ্ধের প্রাথমিক দিনে নিহতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। ভারতীয় সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানি হামলায় ৩৫ জন ভারতীয় সৈন্য এবং ১০ জন নাগরিক নিহত হয়েছে, যেখানে পাকিস্তান দাবি করে যে ভারতীয় হামলায় তাদের ৩১ জন নাগরিক ও ২০ জন সৈন্য মারা গেছে। পাকিস্তানি গণমাধ্যমের তথ্যে বলা হয়, তাদের বিমান বাহিনী ভারতের ৫ থেকে ৬টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে, যার ফলে ভারতীয় পাইলট ও সৈন্যদের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে। ভারত বলছে, তারা পাকিস্তানের একটি বিমান ও কয়েকজন সৈন্যকে নিশ্চিহ্ন করেছে। সামগ্রিকভাবে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০-৭০ জন সৈন্য ও নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্ভরযোগ্য তথ্যের অভাবে সংখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়।
কাদের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হল?
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে দুই দেশের দাবি পরস্পর বিরোধী। ভারত দাবি করে যে পাকিস্তানের সামরিক ভিত্তি ও সন্ত্রাসী ক্যাম্প ধ্বংস হয়েছে, যার মূল্যানুমান ৫০ কোটি ডলারের বেশি। পাকিস্তান বলছে, ভারতের হামলায় তারা নিহত ও আহতের সংখ্যা বেশি হলেও, সামরিকভাবে তাদের ক্ষতি সামান্য, কারণ তাদের বিমান বাহিনী ভারতীয় আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সফল হয়েছে। ভারতীয় বিমানের ক্ষতি (৫-৬টি বিমান) এবং ট্যাঙ্কের ক্ষতি পাকিস্তানের দাবিতে ১ বিলিয়ন ডলারের ওপর। তবে, স্বাধীন তথ্যের অভাবে এই ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়। গ্রামীণ এলাকায় ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের জনগণের সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে, যা পাকিস্তান গুরুতর ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করছে।
পাকিস্তানের ভূমিকা: সাহসের প্রমাণ
পাকিস্তান এই যুদ্ধে নিজেকে শক্তিশালী প্রতিরক্ষার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। গিলগিত সীমান্তে পাকিস্তানি সৈন্য ও বিমান বাহিনী ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমানকে পিছু হটতে বাধ্য করে, যা পাকিস্তানের সামরিক দক্ষতার একটি জয়ের কাহিনি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই যুদ্ধকে "সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই" বলে অভিহিত করেছেন। তাদের JF-17 ও J-10C বিমান ভারতের উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে সমানে লড়াইয়ের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রমাণ দেয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যস্থতা প্রস্তাব করে, কিন্তু দুই দেশই এটি গ্রহণ করে না। চীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কৌশলগত সমর্থন দেয়। জাতিসংঘ আহ্বান জানায় যুদ্ধবিরতি রক্ষার, তবে এখনো কোনো সমাধান বেরোয়নি।
একটি নতুন ইতিহাসের শুরু
পাকিস্তানের জন্য এই যুদ্ধ একটি সাহসিক গল্প, যেখানে তারা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেদের শক্তি ও সংকল্প প্রমাণ করেছে। গিলগিত সীমান্তে নিমিষের মধ্যে আগ্রাসন প্রতিরোধের এই ঘটনা পাকিস্তানের সামরিক ইতিহাসে একটি সোনালী অধ্যায় হিসেবে লেখা হবে। যুদ্ধ এখনো চলমান, এবং ভবিষ্যত কী আনে তা নির্ভর করবে দুই দেশের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ওপর। পাকিস্তানের জনগণ এই লড়াইয়ে একতা ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।