ফেসবুকে মনিটাইজেশন

ফেসবুকে মনিটাইজেশন কি?

ফেসবুকে মনিটাইজেশন বলতে বোঝায় ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কন্টেন্ট নির্মাতারা অর্থ আয়ের প্রক্রিয়া। এটি বিভিন্ন উপায়ে করা যায়, যেমন ইন-স্ট্রিম এডস, ফ্যান সাবস্ক্রিপশন, ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট, এবং ফেসবুক স্টারস। মনিটাইজেশন কন্টেন্ট নির্মাতাদের তাদের সময় ও প্রচেষ্টার জন্য পুরস্কৃত করে এবং তাদেরকে আরও উন্নত কন্টেন্ট তৈরিতে উত্সাহিত করে।

ফেসবুকে মনিটাইজেশন

ফেসবুকে মনিটাইজেশন (আয় করা) বিভিন্ন উপায়ে সম্ভব। তবে এটি নিশ্চিত করতে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত এবং প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। ফেসবুকে সফলভাবে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. ফেসবুক পেজ তৈরি করা

প্রথমে, একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে। ব্যক্তিগত প্রোফাইল দিয়ে মনিটাইজেশন সম্ভব নয়, তাই ব্যবসা, ব্র্যান্ড, বা কমিউনিটির জন্য একটি পেজ তৈরি করা অপরিহার্য।

২. যোগ্যতা অর্জন করা

ফেসবুকের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে, যা সাধারণত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে:

ফলোয়ার সংখ্যা: সাধারণত পেজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।

ভিডিও ভিউ: গত ৬০ দিনে কমপক্ষে ৩০,০০০ ১-মিনিটের ভিডিও ভিউ থাকতে হবে, যেগুলি কমপক্ষে ৩ মিনিট দীর্ঘ।
কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলা: ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এবং মনিটাইজেশন নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
৩. মনিটাইজেশন টুলস
ফেসবুকের বিভিন্ন মনিটাইজেশন টুলস ব্যবহার করা যায়:
৩.১. ইন-স্ট্রীম এডস
কনটেন্ট ক্রিয়েট করা: ৩ মিনিট বা এর বেশি সময়ের ভিডিও তৈরি করতে হবে।
এডস চালানো: ভিডিওর মধ্যে ইন-স্ট্রীম এডস যুক্ত করতে হবে।
৩.২. ফ্যান সাবস্ক্রিপশন
ফ্যানদের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে সাবস্ক্রিপশন ফি গ্রহণ করা যায়।
পেজে ‘ফ্যান সাবস্ক্রিপশন’ বাটন যোগ করা এবং সাবস্ক্রাইবারদের জন্য এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট প্রদান করা।
৩.৩. ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট
ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশিপ করে স্পন্সরড কনটেন্ট তৈরি করা।
‘ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট ট্যাগ’ ব্যবহার করে স্পন্সরশিপ প্রকাশ করা।
৩.৪. ফেসবুক স্টারস
লাইভ স্ট্রিমিং এর সময় ফলোয়াররা স্টারস কিনে পাঠাতে পারে, যা পরবর্তীতে অর্থে পরিণত করা যায়।
৪. ক্রিয়েটর স্টুডিও ব্যবহার করা
ক্রিয়েটর স্টুডিও: ফেসবুকের ক্রিয়েটর স্টুডিও ব্যবহার করে ভিডিও কন্টেন্ট ম্যানেজ করা এবং মনিটাইজেশন ইনসাইট দেখা।
৫. পেমেন্ট সেটিংস কনফিগার করা
পেমেন্ট মেথড: পেমেন্ট সেটিংস এ গিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা পেপাল অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে হবে।

ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়ার পদ্ধতি

১. যোগ্যতা অর্জন

ফেসবুকে মনিটাইজেশন সুবিধা পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয়:

পেজের ফলোয়ার সংখ্যা: আপনার পেজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।

ভিডিও ভিউ: গত ৬০ দিনের মধ্যে আপনার ভিডিওগুলোতে কমপক্ষে ৩০,০০০ ১-মিনিটের ভিউ থাকতে হবে, যেখানে ভিডিওর দৈর্ঘ্য অন্তত ৩ মিনিট হতে হবে।

কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড: ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এবং মনিটাইজেশন নীতিমালা মেনে চলা আবশ্যক।

২. ইন-স্ট্রিম এডস

ফেসবুক ইন-স্ট্রিম এডস ভিডিও কন্টেন্টের মধ্যে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আয় করার একটি মাধ্যম। এটি ব্যবহার করতে হলে:

দীর্ঘ ভিডিও তৈরি: ৩ মিনিট বা এর বেশি সময়ের ভিডিও তৈরি করতে হবে।

এডস প্লেসমেন্ট: আপনার ভিডিওর নির্দিষ্ট সময়ের পরে বা ভিডিওর মধ্যে এডস চালানো হয়।

৩. ফ্যান সাবস্ক্রিপশন

ফ্যান সাবস্ক্রিপশন একটি পদ্ধতি যেখানে ফলোয়াররা মাসিক ভিত্তিতে সাবস্ক্রিপশন ফি প্রদান করে বিশেষ সুবিধা এবং এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট পেতে পারে।

সাবস্ক্রিপশন বাটন: পেজে সাবস্ক্রিপশন বাটন যুক্ত করতে হবে।

এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট: সাবস্ক্রাইবারদের জন্য এক্সক্লুসিভ ভিডিও, লাইভ সেশন, বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৪. ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট

ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট বলতে বোঝায় ব্র্যান্ডের সাথে সহযোগিতায় তৈরি করা স্পন্সরড কন্টেন্ট। এটি করার জন্য:

পার্টনারশিপ: ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশিপ করা এবং তাদের পণ্য বা সেবা প্রচার করা।

ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট ট্যাগ: ফেসবুকের ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট ট্যাগ ব্যবহার করে স্পন্সরশিপ প্রকাশ করা।

৫. ফেসবুক স্টারস

ফেসবুক স্টারস একটি পদ্ধতি যেখানে দর্শকরা লাইভ স্ট্রিমিং চলাকালীন স্টারস কিনে ক্রিয়েটরদের পাঠায়।

লাইভ স্ট্রিমিং: ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিং এর সময় দর্শকরা স্টারস পাঠাতে পারে।

স্টারস রিডিম: স্টারস পরে অর্থে রূপান্তরিত করা যায়।

ফেসবুকে মনিটাইজেশন কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকর উপায় যা তাদের কন্টেন্ট তৈরি করার প্রচেষ্টার মূল্য দেয়। ফেসবুকের বিভিন্ন মনিটাইজেশন টুলস এবং পদ্ধতি ব্যবহার করে, কন্টেন্ট নির্মাতারা সহজেই তাদের কন্টেন্ট থেকে অর্থ আয় করতে পারেন। ফেসবুকে সফলভাবে মনিটাইজেশন পেতে হলে নির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জন এবং নীতিমালা মেনে চলা অপরিহার্য।

Previous Post Next Post